বসতভিটা বেদখল, মিঠাপুকুরে পরিবার নিয়ে কবরস্থানে বাস করেন দিনমজুর আব্দুস সোবহান

স্টাফ রিপোর্টার:

রংপুরের মিঠাপুকুরে দখলকৃত বসতভিটা উদ্ধারে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন আব্দুস সোবহান নামের এক দিনমজুর। দীর্ঘদিন ধরে বেদখলে থাকা জমি উদ্ধার করতে না পেরে পারিবারিক কবরস্থানে বানিয়েছেন কুঁড়েঘর। সেখানে স্ত্রী, ছেলের বৌ ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে দিনযাপন করছেন। বেদখলে থাকা সম্পত্তি উদ্ধারে একাধিকবার গ্রাম্য শালিস ডাকলে ও আদালতের রায় পেলেও বসতভিটা উদ্ধার করতে পারেননি তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার রাণীপুকুর ইউনিয়নের হাবিবপুর গ্রামে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাবিবপুর গ্রামে আব্দুস সোবহান (৬৫) পৈত্রিক সূত্রে ১৪ শতক বাসতভিটার জমি পেয়েছেন। এরমধ্যে প্রায় ১০ শতক জমি বেদখলে রেখেছে প্রতিবেশী নয়া মিয়া, মিজানুর রহমানসহ আরও ৩ জন। বাধ্য হয়ে আব্দুস সোবহান পারিবারিক কবরস্থানে ৩টি কুঁড়েঘর তৈরি করে জীবনযাপন করছেন। সেখানে তার স্ত্রী ও এক ছেলের স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বাস করছেন। জায়গার অভাবে তার আরও ২ ছেলে ও তাদের স্ত্রী-সন্তানরা সে বাড়িতে থাকেন না।

দিনমজুর আব্দুস সোবহান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কয়েকজন প্রতিবেশী আমার বসতভিটা দখল করে রেখেছে। আমি গ্রামে শালিস ডেকেছি, আদালতে মামলা করে রায়ও পেয়েছি। কিন্তু জমি উদ্ধার করতে পারিনি। আমার প্রতিপক্ষের লোকজন আওয়ামী লীগের নেতা। এই প্রভাবে জমিগুলো দখলে রেখেছে তারা। আমি অসহায় দিনমজুর। এর সঠিক বিচার চাই।

আব্দুস সোবহানের স্ত্রী হানিফা খাতুন বলেন, নিজেদের জমি উদ্ধার করতে গেলে প্রভাবশালীরা আমাদের হুমকি দেয়, মারপিট করে। 

কয়েকজন গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আব্দুস সোবহানের প্রতিপক্ষরা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত। এ কারণে একাধিকবার বৈঠক হলেও তারা সেই রায় মেনে নেয়নি। উল্টো প্রাণনাশের হুমকি দিত। ভয়ে গ্রামের লোকজনেরাও প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রতিবেশী জানান, আব্দুস সোবহান অসহায় মানুষ। আর বেদখলকারীরা প্রভাবশালী। এ কারণে তিনি জমিটুকু উদ্ধার করতে পারছেন না।

আব্দুস সোবহানের বসতভিটা দখলের অভিযুক্তদের মধ্যে একজন হলেন মিজানুর রহমান। অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে মিজানুর রহমান বলেন, আব্দুস সোবহানের জমি বেদখলে রয়েছে, এটি সত্য। তবে পুরোপুরি আমার কাছে নেই। আমার পাশের বাড়ির লোকজনেরা জমিগুলো দখলে রেখেছেন। তারা ছেড়ে দিলে, আমিও জমি ছেড়ে দেব। 

রাণীপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু ফরহাদ পুটু বলেন, বসতভিটা বেদখলের বিষয়ে একাধিকবার শালিস হয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। পরে তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।

এম২৪নিউজ/আখতার

Leave a Reply