মসজিদের গেটে বিদ্যুতের খুঁটি যেন মরণফাঁদ; সরানোর উদ্যোগ নেই পবিসের

স্টাফ রিপোর্টার:

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মোলংহাট জামে মসজিদের গেটে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতাধীন বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের একটি খুটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। মসজিদের প্রবেশদ্বারে বিদ্যুতের ওই খুঁটিতে হাটমিটার থাকায় এলোমেলোভাবে থাকা তারে যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। ঝুকিপূর্ণ খুটিটি সরাতে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে মৌখিক ও লিখিতভাবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে অবগত করার পরেও মিলছেনা সমাধান। এরফলে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে মুসল্লীরা। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনসাধারণ।

সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার রানীপুকুর ইউনিয়নে মোলংহাট নামে একটি ঐতিহাসিক বাজার রয়েছে। বাজারটি প্রতিবছর সরকারিভাবে ইজারা দেওয়া হয়। রাজস্ব আয় জমা হয় রাষ্টীয় কোষাগারে। এই হাটের পশ্চিম-দক্ষিণ দিকে মোলংহাট জামে মসজিদ। মসজিদের পাশেই মোলং শাহ নামে এক পীরের মাজার রয়েছে। কালের বিবর্তনে প্রাচীনতম এই ঐতিহাসিক হাটের উত্থান পতন হলেও মসজিদের ব্যপক উন্নয়ন হয়েছে। মসজিদটিতে মাত্র একটি প্রবেশদ্বার। আর সেই প্রবেশদ্বারের মাঝ বরাবর বিদ্যুতের একটি খুটি রয়েছে। সেই খুঁটিতে হাটে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য হাটমিটার লাগানো আছে। মিটারটির ওয়্যারিং ঠিকমতো না থাকায় বিদ্যুৎপৃষ্টের ঝুঁকি রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নিকট ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুতের খুটি সরাতে কয়েকদফায় যোগাযোগ করা হলেও কোন গুরুত্বই দেয়নি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস)। একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পবিসের উদাসীন কার্যক্রম নিয়ে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শামীম মিয়া নামে এক মুসল্লী বলেন, মসজিদের একটাই গেট তার সামনে বিদ্যুতের খুঁটি এবং হাটমিটার। বাংলাদেশে আর কোথাও মনে হয় এমন দৃশ্য চোখে পড়বে না। নামাজ আদায় করে বের হওয়ার সময় মুসল্লীদের কষ্ট তো আছেই, পাশাপাশি বিদ্যুৎ শকের ঝুঁকি রয়েছে। খুটিটি মাত্র ৪ হাত সরালে সব সমস্যার সমাধান হয় আর ঝুঁকিও থাকেনা। পল্লী বিদ্যুতের লোকজন এতটুকু কাজ করছে না।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুর রউফ বলেন, মোলংহাট প্রাচীনতম একটি হাট। প্রতি রবিবার ও বুধবার আশেপাশের গ্রামবাসী ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই হাটে আসেন। প্রায় ২ বছর আগে মসজিদে জায়গা সংকুলান হওয়ায় নতুন করে মসজিদ নির্মাণ কাজ চলছে। নতুনভবে মসজিদ নির্মাণ করতে গেলে প্রধান গেটে বিদ্যুতের খুটি পড়ে যায়। এতে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। অসাবধানতার কারণে খুঁটিতে থাকা তারে যদি কারও হাত পড়ে তখন কি হবে? পল্লী বিদ্যুৎ এর দায় এড়াতে পারেনা। একে তো মুসল্লীদের সমস্যা হচ্ছে তার উপর কোন দূর্ঘটনা হলে এর দায় বিদ্যুতের লোকজনকেই নিতে হবে।

মোলংহাট জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান বলেন, মসজিদের গেট থেকে বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর জন্য আবেদন করার এক বছর পার হয়ে গেল। কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কোন উদ্যোগ নেয়নি। কয়েকমাস আগে পূরনো খুঁটি পরিবর্তন করে নতুন খুঁটি বসানো হয়, তখনো গেট থেকে ৪ থেকে ৫ হাত সরিয়ে খুটিটা বসাতে বললেও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ওদের নিয়মের শেষ নাই। সামাজিক কারণ বিবেচনা করে সমস্যাটির খুব দ্রুত সমাধান করা উচিৎ।

এ বিষয়ে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ম্যানেজার মুহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, এ বিষয়ে বক্তব্য মন্তব্য করতে হলে আগে আবেদন দেখতে হবে। আবেদন না দেখে মন্তব্য করা সম্ভব নয়।

এম২৪নিউজ/আখতার

Leave a Reply