স্টাফ রিপোর্টার:
রংপুরের মিঠাপুকুরে প্রতিবেশী শশুর-জামাইর ঝগড়া থামাতে গিয়ে অন্ডকোষে আঘাত পেয়ে সোহান মিয়া (২৫) নামে এক যুবক ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের পাইকান গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত সোহান ওই গ্রামের মৃত. শাহজাহান আলীর ছেলে।
এ ঘটনায় নিহত সোহানের মা মর্জিনা বেগম বাদি হয়ে ৫ জনকে আসামী করে মিঠাপুকুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পরদিন শনিবার দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৮ মাস আগে পাইকান গ্রামের মোহাম্মদ আলী (২৭) এর সাথে পার্শ্ববর্তী জারুল্যাবাজ গ্রামের আব্দুস সালাম এর মেয়ে সাদিয়া আফরিনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আলী-আফরিন দম্পত্তির মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়।
তাদের পারিবারিক বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার বিকালে জামাই আলীর বাড়িতে কয়েকজন লোকসহ আসেন শশুর আব্দুস সালাম। মেয়ে-জামাইয়ের সাথে পারিবারিক কলহের বিষয়ে আলোচনার একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে জামাই আলীকে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। এসময় আলীর চিৎকার শুনে এগিয়ে যান প্রতিবেশী সোহান। তিনি আলীকে বাঁচাতে গেলে আলীর শশুর আব্দুস সালাম সোহানের অন্ডকোষ বরাবর লাথি মারেন। সেখানেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সোহান। প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে ঘাতক সালামের সঙ্গে আসা আরও ২ জন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এসময় ঘাতক সালাম ও তার মেয়েকে অবরুদ্ধ করে রাখেন গ্রামবাসীরা।
পরে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। এসময় গ্রামবাসীরা আলীর শশুরের সাথে থাকা আরও ২-৩ কারা ছিল সেটি চিহ্নিত করে অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে এসে সোহানের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এসময় হত্যার দায়ে অভিযুক্ত আব্দুস সালাম, তার স্ত্রী ও মেয়ে সাদিয়া আফরিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার ৮ মাস আগে বিয়ে হয়েছে। কিন্তু বিয়ের আগে আমি যে মেয়েকে দেখেছিলাম তাকে দিয়ে বিয়ে না দিয়ে অন্য একটি মেয়েকে দিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়। তারা যে আমার সাথে প্রতারণা করেছে সেটা নিয়েই বিয়ের পর থেকে ঝামেলা চলছিল। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে আমার শশুর যে ঘটনা ঘটিয়েছেন সেটা অন্যায়।
আলীর শশুর আব্দুস সালাম বলেন, মেয়ের পরিবারিক অশান্তির বিষয়ে জামাইয়ের বাড়ি আসছিলাম। জামাইকে থাপ্পড়ও মারছি। এরপর কি থেকে কি হয়ে গেল জানিনা।
নিহত সোহানের মা মর্জিনা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে অন্যায়ভাবে মারপিট করে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি হত্যাকারিদের বিচার চাই।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মোস্তফা কামাল বলেন, এ ঘটনায় নিহত সোহানের মা মর্জিনা বেগম বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা অব্যাহত আছে।
এম২৪নিউজ/আখতার