মিঠাপুকুরে শালমারা নদী থেকে বন্দোবস্ত বাতিল করায় আনন্দ মিছিল

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার:

মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়নে শালমারা নদী থেকে বন্দোবস্ত বাতিল করায় আনন্দ মিছিল করা হয়। ২৭ জুন সকাল সাড়ে ৯টায় শালমারা হাটে এই মিছিল এর আয়োজন করে রিভারাইন পিপলের শালমারা নদী সুরক্ষা কমিটি। মিছিল ও সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্ববায়ক শাহ জালাল।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে শালমারা হাটের পাশেই নদী থেকে সাড়ে ছয় একর ব্যক্তির নামে লিখে দেওয়া হয়। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে আশির দশকে ৫জন জেল খেটেছেন। মামলা হয়েছিল ৭২জনের নামে। পরবর্তীতে মামলার রায়ে নিরপরাধ প্রমাণিত হন।

২০১৯ সালে রিভারাইন পিপল শালমারা নদী সুরক্ষা কমিটি গঠন করে। এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয় কারাবাস করা শাহজালালকে। নদীটি রক্ষায় নতুন করে আন্দোলন সংগঠিত হতে থাকে। সেই আন্দোলনের অর্জন শালমারা নদী মুক্ত করা।

গত মে মাসের ২৯ তারিখ জেলা প্রশাসক আসিব আহসানের সভাপতিত্বে ‘জেলা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটির’ মে ২০২২ সভার কার্যবিবরণীতে শালমারা নদীর ছয়জনের গ্রহণ করা জমি বাতিল করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

২৭ জুন ২০২২ তারিখ সোমবার সকাল থেকে শালমারা হাটে জমায়েত হতে থাকে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। এদের মধ্যে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের সংখ্যাই বেশি। সবার চোখে মুখে নদী রক্ষা করতে পারার আনন্দ। কিছুক্ষণের মধ্যেই শালমারা হাট ভরে ওঠে মানুষে মানুষে।

এই মিছিলে অংশ নেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ও রিভারাইন পিপলের পরিচালক অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, শালামারা নদী সুরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক শাহ জালাল, সদস্যসচিব আব্দুল হালিম রাঙাসহ অনেকেই। নেতৃত্ব দেন রিভারাইন পিপলের শালমারা নদী সুরক্ষা কমিটির সদস্যগণ।

শাহজালাল বলেন, ‘যুবক বয়সে এ নদীর জন্য আন্দোলন করে জেলে গিয়েছিলাম। বৃদ্ধ বয়সে এসে নদী উদ্ধার করতে পারলাম। জীবনে এটা বড় অর্জন।’ তিনি আরও বলেন, কতজন বলেছিল, এ নদী উদ্ধার করতে হলে আরও একবার জন্ম নিতে হবে। সেটার প্রয়োজন হয়নি। নদীটি মুক্ত দেখে যাচ্ছি। জীবনে আর কিছু চাওয়ার নেই।’

অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘শালমারা একটি ঐতিহ্যবাহী নদী। জনজীবনে এ নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। রিভারাইন পিপলের উদ্যোগে স্থানীয়দের দ্বারা সংগঠিত করে এটি দ্বিতীয় নদী মুক্ত করা। এর আগে রিভারাইন পিপলের উদ্যোগে নীলফামারীতে দেওনাই নামের আরেকটি নদী উদ্ধার করা হয়। শালমারা নদী সুরক্ষা কমিটির আন্দোলন, উপজেলা এবং জেলা প্রশাসনের আন্তরিকতার কারণে এ নদীটি মুক্ত করা সম্ভব হলো।’

আনন্দ মিছিল শেষে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ ঘোষণা করেন আগামী সপ্তাহে নদী মুক্তির উৎসব করা হবে।

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সদস্যসচিব মোহাম্মদ হালিম রাঙা, সংগঠনের সদস্য আজিজার রহমান, মাহফুজার রহমান, রূপা দাস, জেলে হেম চন্দ্র দাস প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য শরিফুল ইসলাম।

এম২৪নিউজ/আখতার

Leave a Reply