অনলাইন ডেস্ক:
রংপুরে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে মঙ্গলবার পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২২)। তার মৃত্যুতে বাড়িতেড় শোকের মাতম চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তার বাবা-মা।
আজ মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন। আবু সাইদ পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছোট ছেলে।
জানা গেছে, ৯ ভাইবোনের মধ্যে নিজের ইচ্ছায় লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন আবু সাঈদ। অভাবের কারণে অন্য সন্তানদের লেখাপড়া করাতে না পারলেও সাঈদ খালাশপীর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। রংপুর সরকারি কলেজ থেকে একই ফলাফল নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন সাঈদ।
নিহতের ছোট বোন সুমির আর্তনাদে আকাশ বাতাশ ভারী হয়েছে। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, হামার ভাইকে ওরা মেরে ফেলল ক্যান? হামার ভাই বেঁচে থাকলে হামার স্বপ্ন পূরণ হতো।
প্রতিবেশি এক ভাবী বলেন, সাঈদের বাবা দিনমজুর হওয়ায় লেখাপড়ার টাকা বহন করতে সক্ষম ছিলেন না। তাই অভাবের কারণে আমার ছেলের লেখাপড়ার সরঞ্জামাদি ও পোশাক ব্যবহার করে লেখাপড়া চালিয়েছে। সে একজন মেধাবী ছাত্র হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছিল। ও ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতো।
সাঈদের মা মনোয়ারা নির্বাক হয়ে ফ্যালফ্যাল করে সবার দিয়ে তাকিয়ে আছেন। মাঝে মাঝে বাবা বাবা বলে ডাকছেন তিনি। তার বাবা মকবুল হোসেনের কণ্ঠে কোনো কথা নেই। তিনিও সবার মুখের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। নিহত সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কারের প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন। তার মৃত্যুতে এলাকা শোকে আচ্ছন্ন হয়েছে।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমরা লোকাল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে সতর্ক অবস্থানে আছি; যেন বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করা না হয়। সূত্র: দেশ রুপান্তর
এম২৪নিউজ/আখতার