‘ঘুম থেকে ডাকায়’ রেগে গিয়ে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা

অনলাইন ডেস্ক:

রংপুরের বদরগঞ্জে দুই সন্তানের জননীর মৃত্যুর সাত মাস পর হত্যার রহস্য উদ্ঘটন করেছে পুলিশ। মামলার প্রধান আসামী স্বামীকে গ্রেফতারের পর ওই রহস্য উদ্ঘটন হয়। ঘুম থেকে ডেকে তোলায় রাগান্বিত হয়ে স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিনকে শ্বাস রোধে হত্যা করেন স্বামী ছইদার সরকার ওরফে সহিদার রহমান।

রোববার (১৪ জুলাই) বিকেলে রংপুর পুলিশ সুপার হলরুমে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার শাহজাহান। পুলিশ সুপার কার্যালয়ের ওই ব্রিফিংয়ের তথ্য উল্লেখ করা হয়, ‘বদরগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছোট হাজিপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আব্দুল মমিনের মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিনের সঙ্গে ১৪ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয় পাশের তেলীপাড়া গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে সহিদার রহমানের। দাম্পত্য জীবনে তাদের ঘরে দুইটি সন্তান জম্ম নেয়।

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর নিলুফা ইয়াসমিনকে তার স্বামীসহ পরিবারের লোকজন গুরুতর অবস্থায় বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তাকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন।

পরিবারের লোকজন দাবি করছিলেন, নিলুফা ইয়াসমিন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ওই সময় নিলুফা ইসয়াসমিনের পরিবারেরও কোনো অভিযোগ ছিল না। কিন্তু থানা পুলিশের সন্দেহ হলে হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

ওই ঘটনায় বদরগঞ্জ থানায় ইউডি মামলা হয়। সম্প্রতি চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উঠে এসেছে ওই নারীকে শ্বাসরোধে করা হয়েছে। ওই ময়নাতদন্তের রিপোর্টের আলোকে নিলুফা ইয়াসমিনের বাবা আব্দুল মমিন বাদী হয়ে গত ১৩ জুলাই স্বামী সহিদার রহমান ও শ্বশুর আব্দুল হাইসহ অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনকে আসামি করে বদরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বদরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনোয়ার হোসেন ওই রাতেই স্বামী সহিদার রহমান গ্রেফতার করেন। এরপর তিনি পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেন। পরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

সহিদার রহমান স্ত্রীকে হত্যার বর্ণনা দিয়ে ওই ব্রিফিংয়ে রংপুরের পুলিশ সুপার শাহজাহান বলেন, ঘটনার দিন স্থানীয় হাটে নাইট ডিউটি করে সহিদার রহমান ভোরে বাড়িতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। দুপুরে স্ত্রী  নিলুফা ইয়াসমিন তাকে গরুকে খাবার দেওয়ার জন্য ঘুম থেকে ডেকে তুলেন। এ সময় তিনি রাগান্বিত হয়ে স্ত্রীকে গলা ২-৩ মিনিট চিপে ধরেন। নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে রেখে বাড়ির বাইরে যান। কিছুক্ষণ পর বাড়িতে এসে নিলুফাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় স্বামী প্রচারণা চালান, তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।’ সূত্র: সময়

এম২৪নিউজ/আখতার

Leave a Reply