শঠিবাড়িতে কোটি টাকা মূল্যের সরকারী সম্পত্তি প্রভাবশালীদের দখলে

বে-দখল হওয়ার ফলে হাটে গরু-ছাগল রাখার জায়গা হচ্ছে না, উদ্ধারে উদ্যোগ নেই, নিশ্চুপ প্রশাসন –

স্টাফ রিপোর্টার:

রংপুরের মিঠাপুকুরে শঠিবাড়ী হাটের কোটি টাকা মুল্যের সরকারী সম্পত্তি বে-দখল হয়ে গেছে। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল দির্ঘদিন ধরে দখলে রাখলেও উদ্ধারে উদ্যোগ নেয়নি কেউ। অনেকটা নিশ্চুপ ভুমিকা পালন করছে উপজেলা প্রশাসন। এরফলে, অবশিষ্ট জমিটুকুও ধিরে ধিরে বে-দখল হয়ে যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার শঠিবাড়ী গরুর হাটের মোট সম্পত্তি ৮৪ শতক। এরমধ্যে, ৪৫৫ দাগে ৫৪ শতক, ৪৫৬ দাগে ৬ শতক ও ৪৭৪ দাগে ২৪ শতক জমি রয়েছে। প্রায় শত বছর ধরে ওই সম্পত্তিতে হাট বসছে নিয়মিত। দির্ঘদিন ধরে একটি স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ধিরে ধিরে সম্পত্তিটুকু বে-দখল করে স্থাপনা নির্মান করেছেন। এরফলে, হাটের জায়গা সংকুচিত হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শঠিবাড়ী গরুর হাটের ৪৫৫ ও ৪৫৬ দাগের পশ্চিম অংশে বে-দখল করে হলুদ ভাঙ্গার মিল, ওর্য়াকসপ ও বারান্দা বসিয়েছেন বাবু মিয়া। তার উত্তরে মোটর মেকানিকের দোকান দিয়েছেন সোহাগ মিয়া। বৌদ্ধনাথ বাবু’র গেট হতে পূর্ব পর্যন্ত মিষ্টি’র কারখানা দিয়েছেন দেবাশীস ঘোষ ও সুধাংশু বাবু এবং ঘর ও বারান্দা তুলেছেন গোবিন্দ বাবু। এছাড়াও, মৃত. আব্দুর রহমান মাস্টার এবং সাহের মিয়া’র বাড়ি ও গালামালের দোকান বসিয়ে বে-দখল করেছেন। ৪৭৪ দাগের দক্ষিণে ৫টি দোকান ঘর বসিয়েছেন কানাই, নিমাই, সন্তোষ কুমার, আব্দুল হাকিম ও পরিতোষ। দির্ঘদিন ধরে বে-দখল থাকলেও রহস্যজনক কারণে উচ্ছেদ অভিযান হয়নি।

প্রতি রবিবার ও বৃহস্পতিবার ওই স্থানে বসছে গরুর হাট। কিন্তু, বে-দখল হওয়ার ফলে হাটে জায়গা সংকুলান হচ্ছে। গরুর হাটের ব্যবসায়ি মিলন মিয়া বলেন, হাটবারে হাজার হাজার গরু কেনাবেচা হয় এই হাটে। অথচ, বে-দখল হওয়ার ফলে হাটে গরু-ছাগল রাখার জায়গা হচ্ছে না।

আরেক ব্যবসায়ি আল-আমিন মিয়া বলেন, একটি প্রভাবশালী মহল হাটের কোটি টাকার মুল্যের সম্পত্তি বে-দখল করার ফলে চরম ভোগান্তিতে আছি আমরা। বে-দখল হওয়া সম্পত্তি উচ্ছেদের অনুরোধ করেছেন তিনি।

সরকারী সম্পত্তি দখলদার কানাই ও নিমাই বাবু বলেন, এগুলো সরকারী সম্পত্তি, আমরা দোকানঘর তুলে ব্যবসা করছি। সরকার চাইলে জায়গা ছেড়ে দেব।

শঠিবাড়ী হাট ইজারাদার নুরুল ইসলাম প্রামাণিক লালন বলেন, গরুর হাটের ৮৪ শতক সম্পত্তির মধ্যে প্রায় অর্ধেকটা বে-দখলে। এতে, ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় সামাল দেওয়া কষ্টকর। তিনি আরও বলেন, বে-দখল হওয়া পুরো সম্পত্তিটি উদ্ধার হলে হাটে পর্যাপ্ত জায়গা হবে।

দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান তালুকদার বলেন, কিছু মানুষ সরকারী সম্পত্তি বে-দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। এগুলো উচ্ছেদ করলে, হাটের পর্যন্ত জায়গা পাওয়া যাবে।

উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মামুন ভূঁইয়া বলেন, কেউ সরকারী সম্পত্তি বে-দখল করে রাখলে সেগুলো উচ্ছেদ করা হবে।

এম২৪নিউজ/আখতার।