মিঠাপুকুরে গ্রামবাসীকে নিয়ে রাস্তা ও ব্রিজের মুখ বাঁধলেন ব্যবসায়ী জুয়েল

স্টাফ রিপোর্টার:

‘বন্যাত হামার চলাচলের রাস্তাটা ভাংগি যায়। হামরা ম্যালাবার চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে গেছনো, দিমো-দিচ্ছি করতে করতে ৬ মাস হয়্যা যায়। হামরা এখন সবাই মিলি রাস্তা ও ব্রিজের মুখ বাধঁছি।’ -ক্ষোভের সুরে কথাগুলো বলছিলেন উপজেলার বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নের হাছিয়া নামাপাড়া গ্রামের ইউনুস আলী। আরেক গ্রামবাসী শাহানুর মিয়া বলেন, ‘হামাক এই রাস্তা দিয়্যা চলাচল করা নাগে। হামার রাস্তা হামরায় ঠিক করমো, চেয়ারম্যান-মেম্বারের ট্যাকার দরকার নাই।’

সরেজমিনে হাছিয়া নামাপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের ১৩ জন যুবক মিলে কাজ করছেন। তারা কাঁধে করে মাটি বহন করে বেঁধে ফেলেছেন ব্রিজের সংযোগ সড়কটি। কাজগুলো দেখভাল করছেন স্থানীয় হাবিবুর রহমান জুয়েল নামে একজন ব্যবসায়ি। তিনিই স্বপ্রনোদিত হয়ে জনগনের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য এগিয়ে এসেছেন। ভেঙ্গে যাওয়া রাস্তা ও ব্রিজের মুখটি বাঁধতে স্থানীয়দের আর্থিক সহায়তা করছেন তিনি।

স্থানীয় নয়া মিয়া বলেন, ‘আমাদের একমাত্র চলাচলের ভাঙ্গা রাস্তাটি ঠিক করার জন্য চেয়ারম্যান-মেম্বরের অনেক ধরনা দিয়েছি। কিস্তু, কোন সহায়তা পাইনি। পরে জুয়েল ভাই নিজেই রাস্তাটি ঠিক করার জন্য আমাদের আর্থিক সহায়তা করেছেন।’

গ্রামবাসী শাহিন মিয়া ও আবু সাইদ বলেন, ‘আমরা গ্রামবাসীরা মিলে রাস্তাটি ঠিক করার জন্য একত্রিত হয়েছি। ৭ দিন কাজ করলেই রাস্তা ও ব্রিজের মুখটি ঠিক হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে, ব্রিজের মুখটি ঠিক হয়েছে। মানুষজন আগের মত চলাচল করছেন রাস্তাটি দিয়ে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নের হাছিয়া, হেলেঞ্চা, উচা বালুয়া, সন্তোষপুর, সোনারপাড়া, আকন্দপাড়া ও নামাপাড়া গ্রামের প্রায় চার হাজার মানুষের চলাচল এই রাস্তা দিয়ে। ৫ বছর আগে কাঠগড়ি নদীর ব্রিজের উপর নির্মিত হয় একটি ব্রিজ। হঠাৎ বন্যায় রাস্তাটিসহ ভেঙ্গে যায় ব্রিজের দু’পাশের সংযোগ রাস্তা। এলাকাবাসি ইউপি চেয়ারম্যান ময়নুল হকের সাথে একাধীকবার যোগাযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি। এরফলে, ৬ গ্রামের প্রায় ৪ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগ পড়েছিলেন।

এ সংক্রান্ত একটি স্ব-চিত্র প্রতিবেদন অনলাইন নিউজ পোর্টাল মিঠাপুকুর২৪নিউজডটকম-এ প্রকাশ হলে স্থানীয় ব্যবসায়ি হাবিবুর রহমান জুয়েল রাস্তা ও ব্রিজের মুখটি ঠিক করার জন্য এগিয়ে আসেন।

স্থানীয় শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘৬ গ্রামের প্রায় ৪ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা এটি। বন্যার কারণে ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে রাস্তাটি দিয়ে চলাচল দুরুহ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। চরম দুর্ভোগে পড়েছিলাম আমরা। জুয়েল ভাইয়ের অর্থায়নে রাস্তা ও ব্রিজের মুখটি ঠিক করেছি।

ব্যবসায়ি জুয়েল মিয়া বলেন, গ্রামবাসী রাস্তাটির জন্য দির্ঘদিন ধরে কষ্টে ছিলেন। বিষয়টি জানার পর স্থানীয়দের সাথে নিয়ে রাস্তা ও ব্রিজের মুখটি ঠিক করে দেই। তিনি আরও বলেন, এলাকার লোকজনের সাথে নিয়ে দায়বদ্ধতা থেকে আমি কাজটি করেছি। আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নাই।

এম২৪নিউজ/আখতার

Leave a Reply