রংপুর অফিস:
রংপুরে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ কোটা সহ সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও স্বারকলিপি প্রদান করছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ রংপুর জেলা কমান্ডার কাউন্সিল।
আজ সোমবার দুপুরে রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তানরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা সরকারি বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আমরা সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাই। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকারও পর আমাদের আন্দোলন করতে হচ্ছে। আমরা চাই সরকার প্রধান আমাদের দাবিগুলো মেনে নিয়ে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের নিশ্চয়তা প্রদান করুক। হাসপাতাল, সরকারি অফিস, বিমানবন্দরসহ সব জায়গায় মুক্তিযোদ্ধাদের ভিআইপি মর্যাদা দেয়া হোক। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা এ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে হুশিয়ারি দেন।
পরে রংপুর জেলা প্রশাসক বরাবর স্বারকলিপি প্রধান করেন। সমাবেশে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর জেলা কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি সুশান্ত ভৌমিকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, রংপুর মহানগর কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি বেলাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, জেলার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সিনিয়র সহসভাপতি খন্দকার মাহামুদ এলাহী বিপ্লব, বদরগঞ্জ উপজেলা কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি মোস্তাকিন বিল্লা।
মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের দাবিগুলো হচ্ছে, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সব পদে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল ও সংরক্ষণ, আলাদা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সহ প্রমোশন বঞ্চিত বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের প্রমোশন দিতে হবে, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বয়সসীমা ৩৫ করতে হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সুরক্ষা আইন পাশ, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রেণী ও মর্যাদা নির্ধারণ সহ চিকিৎসা ক্ষেত্রে হয়রানি বন্ধ করতে হবে। স্বল্প সুদে লোন প্রদান ও সরকারি সম্মানি ভাতা ৩৫ হাজার টাকা করতে হবে।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ, কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় অফিস সহ সকল জেলা মহানগর, উপজেলা, থানা অফিস দিতে হবে, বঙ্গবন্ধু কর্তৃক উপহার মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাষ্টের সম্পত্তি বিক্রয় না করে, লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনে সকল শহীদ, মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অন্তত জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে একজন সদস্যকে ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষমতা প্রদান করতে হবে।
জীবিত বা মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সমান সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের জন্য জাতীয় সংসদে কমপক্ষে ৫০টি সংরক্ষিত আসন সৃষ্টি করতে হবে। জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন পরিষদে ২ জন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত সদস্য পদ সৃষ্টি করতে হবে।
সকল প্রতিষ্ঠানের গভর্ণিং কমিটি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটিতে দুর্নীতি রোধ কল্পে ২ জন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের সন্তানদেরকে বাধ্যতামূলক সদস্য করতে হবে। সমগ্র দেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর হামলা, নির্যাতন ও তাদের জমি দখলের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে এ বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিতে হবে।
দুর্নীতি, মাদক ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মেডিকেল, কারিগরিসহ সকল সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের জন্য শতকরা ১০ শতাংশ আসন দিতে হবে।
এম২৪নিউজ/আখতার