ধর্ষণের মূল্য এক লাখ ২৫ হাজার টাকা!

অনলাইন ডেস্ক:

নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর ধর্ষণের বিচার এক লাখ ২৫ হাজার টাকা! স্কুলছাত্রীর বাবা মামলা করতে এসেও স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান মামলা করতে দেয়নি।

বৃহস্পতিবার রাতে ধর্ষণে অভিযুক্ত হৃদয়ের বাবার নিকট থেকে চেয়ারম্যান জরিমানার অর্ধেক ৭৫ হাজার টাকা আদায় করে নিজের কাছে রাখেন। এমনই অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

স্কুলছাত্রীর বাবা যাদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা হলেন- বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ইটবাড়ীয়া গ্রামের মজিদ সিকদারের ছেলে হৃদয় (২৭), হেউলিবুনিয়া গ্রামের সুলতান গাজীর ছেলে রাসেল (৩০) ও হৃদয়ের বন্ধু জলিল মাঝির ছেলে রাব্বি (২০)।

জানা যায়, স্কুলছাত্রীর বাবা বশির সিকদার ৩০ নভেম্বর বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে এসে তার আইনজীবীর নিকট তথ্য দেয়, তার নাবালিকা মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। ২৭ নভেম্বর সকাল অনুমান নয়টার সময় তার মেয়ে প্রতিবেশী লিজার নিকট প্রাইভেট পড়ার জন্য রাস্তার উপর দাড়ায়।

এ সময় হৃদয়ের নেতৃত্বে অন্যান্যরা দুইটি মোটরসাইকেলে করে এসে স্কুলছাত্রীর গলায় চাকু ধরে খুনের ভয় দেখিয়ে অপহরণ করে তালতলী উপজেলার লাউপাড়া গ্রামে হৃদয়ের মামাত বোন খাদিজার বাড়িতে নিয়ে যায়। স্কুলছাত্রীকে খাদিজার বাড়িতে রেখে রাতে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরের দিন ওই স্কুলছাত্রী হৃদয়ের ফোন দিয়ে তার ফুফু মাকসুদাকে জানায়। মাকসুদা ফোন পেয়ে ২৮ নভেম্বর তাকে উদ্ধার করে।

স্কুলছাত্রীর বাবা বশির খলিফা বলেন, ‘আমি ৩০ নভেম্বর অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে উকিলের চেম্বারে যাই। বিচারক ছুটিতে থাকায় মামলা লেখা সম্পন্ন করেও মামলা করতে পারিনি। এরপর বাড়ি যাবার পরে স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক আমাকে ডেকে আপোস করে দেন। চেয়ারম্যান বলেন, আমাকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা অপরাধীরা দিবে এবং হৃদয়কে বিচার করবে। আমি রাজি না হলেও আমার মেয়ের নানা রাজি হয়। হৃদয় আমার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। অন্যরাও আমার মেয়েকে অপহরণ করেছে।’

চেয়ারম্যান আজিজুল হক বলেন, ‘হৃদয়ের অভিভাবক ও অন্যান্যরা আমার কাছে বৃহস্পতিবার ৭৫ হাজার টাকা জমা দিয়েছে। বাকি টাকা জমা দিলে আমি মেয়ের বাবাকে দিয়ে দেব। আমি ওদের বিচারও করব।’ তবে অভিযুক্ত হৃদয়ের ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি।

বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেএম তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কোন তথ্য জানা নেই। থানায় মামলা হলে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারতাম। তবে এটি জঘন্য অপরাধ।’ সূত্র: ইত্তেফাক অনলাইন

এম২৪নিউজ/আখতার